
লক্ষ্মীপুরে ইলিশের পর ঐতিহ্যবাহী আরও একটি খাবার হলো কাঁচা দুধের তৈরি মহিষের টক দই।
সুস্বাদু ও জনপ্রিয়তায় দেশে এর বেশ সুনাম রয়েছে। সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সবার পছন্দের তালিকায় অন্যতম একটি খাবার এটি। বর্তমানে বিভিন্ন কারণে উৎপাদন কম হলেও দেশব্যাপী এ দইয়ের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
স্থানীয়ভাবে পরিচিত মহিষা দই দৈনিক ১০ টনেরও বেশি উৎপাদিত হয়। আর বছরে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টন মহিষের দই এ জেলায় বেচাকেনা হয়। এ দই উৎপাদনের জন্য প্রায় ৪ হাজার টন দুধ লাগছে।
জেলার পশ্চিম ও দক্ষিণের মেঘনা নদীর দ্বীপ ও বিভিন্ন এলাকার বাথান থেকে দুধ সংগ্রহ করা হয়। উৎপাদিত এ দই বিক্রি করে বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা আয় হয়।
দই বিক্রেতা, মহিষের বাথান মালিক ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
গরুর দুধের দইয়ের চেয়ে মহিষা দই বেশ জনপ্রিয়। জেলার ছোট-বড় প্রায় ৪০টি বাজারে দোকানিরা দই বিক্রি করেন।এ জেলায় দিনে প্রায় ১০ টনেরও বেশি দই বিক্রি হয়। ১৫০-২০০ টাকা কেজি ধরে দিনে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকার দই বিক্রি করে থাকেন দোকানিরা। এতে বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার দই বিক্রি হয়
চর থেকে দুধ আনার পর কাঁচা দুধ সরাসরি ১ থেকে ২ কেজি ধারণকৃত এক ধরনের পাত্রে ঢালা হয়। পাত্রগুলোকে টালি বলা হয়। টালিতে কাঁচা দুধ রাখার ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর দুধ জমে দধি হয়। প্রতি লিটার দুধে ৯৫০ গ্রাম দৈ হয়। এ দৈ ফ্রিজিং ছাড়া এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে।
মহিষের দুধের চাহিদা বাড়লেও আগের তুলনায় এখন মহিষের সংখ্যা অনেক কম।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার চরাঞ্চলেই মহিষের উৎপাদন বেশি। মেঘনা নদীর ১২টি দ্বীপ চর মূল ভূখণ্ডে প্রায় ২০ হাজার মহিষ পালন করা হয়।
তবে স্থানীয় কয়েকজন বাথান মালিক জানান, প্রকৃত পক্ষে সরকারি হিসেবের দ্বিগুণ মহিষ পালন করা হয়।
সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মহিষ বিভিন্ন চরে পালন করা হয়।
তবে সংকট এর যায়গা আছে- চরাঞ্চলে মানুষের বসবাস বেড়েছে। এ ছাড়া চাষাবাদও বেড়েছে। এতে মহিষের চারণভূমি কমছে। এ জন্য অনেকেই মহিষ পালন ছেড়ে দিচ্ছেন।।
পশুসম্পদ কর্মীদের মতে-
মহিষের দই অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু। এ জেলায় প্রতিদিন ১০ টনের বেশি মহিষের দধি উৎপাদন হচ্ছে। দিন দিন এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এই খাতের সম্ভাবনা আরো বিস্তৃত করতে পারে।