spot_img
Home বিশ্ব এশিয়া রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে- প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে- প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে- প্রধানমন্ত্রী

এবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট এবং এর স্থায়ী সমাধানের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ আলোচনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সোমবার (০৪ অক্টোবর) বিকেলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় গণভবনে উপস্থিত থাকার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন সাংবাদিকরা। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা ও এর স্থায়ী সমাধানের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়, যা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখবে বলে আমি আশা করি।

তিনি বলেন, ৭৬তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান যেমন সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের অধিবেশন চলাকালে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছি। বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে আমি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ও সহযোগিতা কামনা করি।

সরকারপ্রধান বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সম্পর্কে আমি আবারও বিশ্বনেতৃবৃন্দকে স্মরণ করিয়ে দেই যে, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে। রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই কেবল এ সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে বলে উল্লেখ করে আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে গঠনমূলক উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানাই।

শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, সৌদি আরব, ওআইসি, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, গাম্বিয়া এবং বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ২২ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় আমি মূল বক্তব্য দিই। অনুষ্ঠানে তুরস্ক, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা এবং আসিয়ানের বিশেষ দূত বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে কয়েকটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানাই।

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দেওয়া প্রস্তাবগুলোর কথা সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো হলো:
ক. প্রত্যাবাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এ লক্ষ্যে সব কার্যক্রম পরিচালিত করা।
খ. মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করা।
গ. রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর কার্যকর ভূমিকা পালন।
ঘ. জাতিসংঘ ও উন্নয়ন সহযোগীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর পদক্ষেপ ও প্রকল্প গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন।
ঙ. রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত সহিংসতা ও জাতিগত নিধনের বিচার নিশ্চিত করতে আইসিজে ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে চলমান প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here