
আন্তর্জাতিক নারী দিবস
বহ্নিশিখার আলোয় কাটুক অন্ধকার
ক .
নারী দিবসে বহ্নিশিখার বোনেরা শুভেচ্ছা।
নারীর উপর সংহিসতা আজকের না, বহু পুরোনো।
প্রযুক্তি আর জ্ঞান বিজ্ঞান যতই বৃদ্ধি পাক না কেন, নারীর উপর সহিংসতা, নিপীড়ন, নির্যাতন কমেনি বরঞ্চ বেড়েছে পাল্লা দিয়ে।
নারী অনিরাপদ সর্বত্র। দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী, সংসদ উপনেতা নারী, স্পিকার নারী তা শুধু প্রতিক। সত্যিকার নারী মুক্তি মুখের বুলি ছাড়া কিছুই না।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতায় লিখেছেন -‘ সে পরুষ সে বর্বর সে মুঢ়, সত্যি তাই। নারী পণ্য, নারী ভোগের উপাদান, নারী লাক্স সুন্দরী, নারী পণ্যের মতই ভোগ্যপণ্য। নচিকেতা তার গান গেয়ে জানিয়েছে- তুইতো উপরি যেন পণ্যের ক্যাশমেমো।
এতো যে নারী অধিকারের কথা বলে পশ্চিমারা তারা কি করে। হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনে হেরে প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন – আমেরিকার সমাজ এখনও একজন নারীকে রাস্ট্রপতি দেখতে মানসিক ভাবে প্রস্তুত না।
ধর্ম না যত নিপীড়নের কথা বলেছে, তারচেয়ে বেশি বলেছে ধর্মচর্চাকারীরা। আরব দেশে মধ্যযুগীয় শাসন আছে, সেখানে আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হয় নারীকে। আরব সমাজের বর্বরতা থেকে নারীকে রক্ষা করার আর কোন পথ পায়নি ইসলাম। নারীর দেহের বর্ননা ছাড়া কোন ওয়াজ হয় না দেশে।
সহমরণে হিন্দু নারীকে জ্যান্ত আগুনে পুড়ে মরতে হতো, বিধবা হলে বিয়ে না করে জীবন কাটিয়ে দিতে হতো। ভাগ্যিস রাজা রামমোহন রায় আর ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এসেছিলো হিন্দু সমাজে।
খ.
দেশে নারীর উপর সহিংসতা রোধে এগিয়ে এসেছে প্রান প্রকৃতির যুব সংগঠন গ্রীন ভয়েস। এর প্রতিস্ঠাতা আলমগীর কবির।
গ্রীণ ভয়েস তার নারী সদস্যদের নিয়ে গঠন করেছে বহ্নিশিখা। প্রায় সব জেলাতে বহ্নিশিখা সংগঠিত হচ্ছে। নিজেরাই প্রস্তুত হচ্ছে, প্রশিক্ষণ নিচ্ছে – কেমন করে নিপীড়ক ধর্ষক দ্বারা আক্রান্ত হলে নিজেকে বাঁচানো যায়।
বহ্নিশিখার বোনেরা শারিরীক প্রশিক্ষণ নিচ্ছে নিপীড়ক দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর নিপীড়কের শরীরে কোন স্হানে আঘাত করলে ধরাশায়ী হবে নিপীড়ক।
দেশের উত্তর পশ্চিমান্চলের সব জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে এই কাজ করে এখন ঢাকায় বস্তিবাসী ছিন্নমুল নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
ঢাকার আগারগাঁও এ হয়েছে। ধীরে ধীরে ঢাকার সব ছিন্নমুল নারীদেরকে সংগঠিত করে এর আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ পর্যায়ে মার্চ মাসের পুরোটাই চলবে এই প্রশিক্ষণ।
আলমগীর কবিরকে আমরা পুরুষরা ধন্যবাদ জানাবো না। ধন্যবাদ জানাবে হয়তো নারীরা।
আমরা জানি পদ পদবী পদকের জন্য আলমগীর না। কার্যকর কিছু করবার জন্য আলমগীর।
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। পৃথিবীর সকল মা জননীকে শুভেচ্ছা। বাঙালি সমাজ নারীকে মা জননী হিসেবে শ্রদ্ধা করে। এমন সম্বোধন পৃথিবীর অন্য কোন জাতি নারীসমাজকে দিয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
নারী দিবসে আমাদের আশাবাদ – বহ্নিশিখার মতই একসময়ে জ্বলে উঠবে বাংলাদেশের নারী সমাজ।
সাম্য মৈত্রী নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে সবকিছু, শোষণের কারাগার ভাঙবে- একসময়ে।
প্রীতিলতার হাত ধরে ইলা মিত্র। তারপর মহান মুক্তিযুদ্ধে দুই লক্ষ প্রীতিলতা, দুই লক্ষ ইলা মিত্র।
সমতার সমাজ নির্মাণে হয়তো হবে কয়েক লক্ষ।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস এ বহ্নিশিখার মতই জ্বলে উঠবে নারী।
শুভেচ্ছা শুভকামনা অভিনন্দন।
রুতম আলী খোকন
সম্পাদক ও প্রকাশক
নিউজ টাইমস ২৪ ডট নেট