গাবতলী পশুর হাট: রাত ১২টা তবুও গাবতলী পশুর হাটে গরুতে ভরপুর। যে কয়েকটি বিক্রি হয়েছে তাও আবার লোকসানে। হাটে ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি। শেষ বেলায় গরু নেওয়ার লোক নেই বললেই চলে। তাই বাধ্য হয়ে ট্রাক ভর্তি করে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ব্যাপারীরা।
গাবতলী বেড়িবাঁধের ভিটাতে দেখা গেছে, শতাধিক ট্রাক ভর্তি করে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ব্যাপারী ও গৃহস্থরা। সাধারণত ট্রাকে গরু নামানো ও ওঠানোর জন্য বিশাল এ ভিটা তৈরি করা হয়েছে।
ভিটার পাশে শুয়ে কান্না করছেন কুষ্টিয়ার মিরপুরের ব্যাপারী আনোয়ার হোসেন। তিনি হাটে ৭০টি গরু তুলেছিলেন। এর মধ্যে ২০টি গরু লোকসানে বিক্রি করেছেন। তার দাবি গরুপ্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। বাকি ৫০টি গরু কুষ্টিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, এবার আমার বাড়ির জায়গা-জমি বিক্রি করা লাগবে ভাই। সব গরু ধার-দেনা করে হাটে তুলেছি। এবারে আমাদের ঈদ গাবতলীতে কোরবানি হয়ে গেছে।
আনোয়ার হোসেনের ঠিক পাশেই ট্রাকে গরু ভর্তি করছেন সিরাজগঞ্জের আরেক ব্যাপারী মুন্নাফ মোল্লা। তিনি মোট ৪৫টি গরু হাটে তুলেছিলেন লাভের আশায়। অথচ এর মধ্যে ২১টি গরু লোকসানে বিক্রি হয়েছে। বাকি গরু বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
গাবতলী বেড়িবাঁধে ঘাড়ে গামছা নিয়ে চোখ মুছছেন চুয়াডাঙ্গার খামারি আরিফ জোয়ার্দার। তিনি মোট ৩০টি গরু হাটে তুলেছেন। এর মধ্যে মাত্র দু’টি গরু বিক্রি হয়েছে। তাও আবার ২৫ হাজার টাকা লোকসানে। বাকি ২৮টি গরু আবারও ট্রাক ভাড়া করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ নিয়ে খামার করেছি। প্রথমে গরু কিনেছি এর পর গরু খাওয়ানো ও বড় করা। ইতোমধেই গরুর জন্য দুই বার বিনিয়োগ করেছি। এখন দুই বার ট্রাক ভাড়া দিতে হচ্ছে। আমরা কোরবানির আশায় আসলে গরু পালন-পালন করি। এখন ঋণ দেব কীভাবে সেই চিন্তা করছি। আমাদের মরণ ছাড়া কোনো গতি নেই।
কুষ্টিয়া সদরের বোরহান ব্যাপারী ৮টি বড় গরু হাটে তুলেছিলেন। এরমধ্যে তিনটি দেড় লাখ টাকা লোকসানে বিক্রি করেছেন। বাকি ৫টি গরু ট্রাক ভাড়া করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
বোরহান বাংলানিউজকে বলেন, বড় গরুর দাম বলে না। এর থেকে পানির দামই বেশি। ৪ লাখ টাকার গরুর দাম বলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।